সর্বশেষ

বেতন ও বোনাস বাড়ানোর দাবিতে মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের দিনভর অবরোধ, ভাঙচুর পুলিশের টিয়ার শেল

প্রকাশ :


২৪খবর বিডি: 'বেতন ও বোনাস বাড়ানোর দাবিতে গতকালও রাজধানীর মিরপুরের একাধিক এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। তারা প্রায় ৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভে ওই এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা আশপাশের ভবনেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। শ্রমিকদের বাধার মুখে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর হোসেনের গাড়ি। প্রায় আড়াই ঘণ্টা তার গাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখেন শ্রমিকরা। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরাতে গেলে পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। '

-পরে পুলিশ সেখান থেকে গাড়িটি বের করতে সক্ষম হয়। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। তারা দুইটি বাস ও দুইটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।

'বিকাল ৪টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। শ্রমিকদের অবরোধের কারণে ওই এলাকায় প্রচণ্ড যানজট দেখা দেয়। পুলিশ বাধ্য হয়ে গাড়িগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেয়। এতে ওই এলাকার অলিতে গলিতে যানজট দেখা দেয়। দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। এ ঘটনায় পুলিশ ও শ্রমিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে মিরপুর-১০ নম্বরের গোল চত্বরে প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা বেতন ও বোনাসের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তাদের বিক্ষোভের খবর  মিরপুরের অন্য কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর ১০, ১১, ১৩ ও ১৪ নম্বরে শ্রমিকরা সড়কে বিক্ষোভ শুরু করে।

'পুলিশ শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করলেও তারা অবরোধ চালিয়ে যায়। একপর্যায়ে তারা মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের আশপাশে থাকা বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনের কাঁচ ভাঙচুর শুরু করে। কয়েকটি দোকানের সামনের অংশ ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীরা চারদিকে ছোটাছুটি শুরু করে। পুলিশ তাদের টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। '

' ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক মিরপুর গোল চত্বরে সড়ক অবরোধ করে আছেন। পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা তাতে অংশ নেন। কারও কারও হাতে লাঠি ও ঝাড়ু দেখা গেছে। আজিম নামের এক শ্রমিক জানান, তাদের বেতনে সংসার চলে না। অনেকটা ঋণ করে চলতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, কয়েকদিন আগে আমরা একই স্থানে বিক্ষোভ করেছি। কিন্তু, গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ আমাদের কথায় কোনো সাড়া দেয়নি। সোমাইয়া বানু নামে আরেক শ্রমিক জানান, অল্প বেতনে ঢাকায় জীবন চালিয়ে আবার কিছু টাকা গ্রামে বাবা ও মাকে পাঠাতে হয়। আমরা আবারো রাস্তায় নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। '
 

বেতন ও বোনাস বাড়ানোর দাবিতে মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের দিনভর অবরোধ, ভাঙচুর পুলিশের টিয়ার শেল


সুমন নামে আরেক শ্রমিক জানান, সড়কে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার সময় পুলিশ তাদের কয়েকজনের ওপর হামলা করেছে। আমরা বিচার চাই। আমাদের দাবি গার্মেন্টস মালিক মেনে না নিলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

'এ বিষয়ে পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, সকাল থেকেই আমরা আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরানোর  চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তারা পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে দুপুরের দিকে বিভিন্ন স্থাপনা ও গাড়িতে ভাঙচুর করলে আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি।'

-তিনি আরও জানান, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সকাল থেকে মিরপুর-১৪ ও কচুক্ষেত এলাকার সড়কে নামে পাঁচটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। শ্রমিকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও পরে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
এতে মিরপুর-১৪ ও কচুক্ষেত এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত